ভাবুন, জাস্ট একবার ভাবুন, একটা লোক, তার কেরিয়ার, জীবন, অর্থ-সামর্থ্য সব দিয়ে একটাই উদ্দেশ্যর জন্য লড়ে গেল। কিন্তু এই উদ্দেশ্য যখন সফল হল, সেইলোকটাই আনন্দমঞ্চের আলোর ঝলকানি থেকে বহু, বহু দূরে।
কোথায়? হয়তো রাশিয়ায়, হয়তো সাইবেরিয়ায়, কিংবা হয়তো অন্য কোথাও। যে রাতে বাজির শব্দে আলোর ঝলকানিতে আনন্দে নাচছে গোটা দেশ, সেই রাতে তিনি হয়তো একা উদাস দাঁড়িয়ে রয়েছেন জানলার সামনে।
‘অন্ধ দিগন্ত নিশীথে, বিমানের চলাচল আঁকে শহরের সীমারেখা/ এই রাত জানে আর হবে না তোমার সাথে দেখা’
এই লাইন দুটো কি ওঁর জন্যই লেখা নয়?
চাইলে উচ্চপদস্থ আমলা হতে পারতেন ভদ্রলোক। কিংবা ধুতি-পাঞ্জাবী-গান্ধীটুপির শরণে থেকে স্বাধীন ভারতের কোনও হেভিওয়েট মন্ত্রী। তার চেয়েও বেশি কিছু করার ছিল লোকটার। ‘তৈল ঢালা স্নিগ্ধতনু নিদ্রারসে ভরা, মাথায় ছোট বহরে বড় বাঙালি সন্তান’-দের মধ্যে থেকে মেরুদণ্ডতে ঝাঁকুনি দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া বাংলার জলহাওয়ার জোর।
পাঁচ ফিট সাড়ে আট ইঞ্চির লোকটার উচ্চতা আসলে আকাশভেদী।
আশৈশব যে তিন বাঙালিকে রোলমডেল মেনে এসেছি, যাঁদের কথা পড়তে পড়তে আক্ষরিক অর্থেই গায়ে কাঁটা দিয়েছে, আপনি তাঁদের একজন। প্রতিটি বাঙালি যা হতে চায়, কিন্তু কোনও দিন হতে পারবে না আর, আপনি সেই অনপনেয় উচ্চতা।
শুভ জন্মদিন Bose the Boss! একটা গোটা জাতির, গোটা দেশের শ্রদ্ধাও আপনার জন্য কম। কারণ, শুধু বিপ্লব নয়, আপনি যে ত্যাগ করে গেছেন, সেটা সন্ন্যাস নেওয়ার চেয়েও অনেক অনেক বড়। তাই আপনিই একমাত্র আইডল, যাঁর শুধু আমাদের মনে নয়, খাতায় কলমেও কোনও মৃত্যুদিন নেই।