You are currently viewing চলে যেতে পারতেন জেলের ঘরে, কানের ফুটোয় ভারত ফিরে পেয়েছিল গাভাসকরকে
the legend gavaskar

চলে যেতে পারতেন জেলের ঘরে, কানের ফুটোয় ভারত ফিরে পেয়েছিল গাভাসকরকে

Share this post

ততদিনে তিনি ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিয়েছেন। জনতা ধরেই নিয়েছে, এরকম আর কেউ আসবেন না আর। তারই মধ্যে সুখী অবসর কাটাচ্ছেন তিনি। এরই মধ্যে চলে এলো বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও তার পরবর্তী অধ্যায়। গোটা দেশ তখন উত্তাল। মর্নিংওয়াক সেরে রোজকারের মতোই সবে বাড়ির দোতলার বারান্দায় বসে প্রভাতী আড্ডা জমিয়েছেন বন্ধু ও দীর্ঘদিনের সতীর্থ একনাথ সোলকারের সঙ্গে। এমন সময় রাস্তায় চোখ পড়তেই তাঁর ভুরু কুঁচকে গেল। বাড়ির সামনে একটা গোলমাল শুরু হয়েছে। একটা গাড়িকে থামিয়ে ঘিরে ধরেছে উন্মত্ত জনতা। গাড়ির মধ্যে সামনের সিটে চালক। পিছনে এক মা ও তাঁর সন্তান। চারদিকের পরিবেশ উত্তপ্ত। রোজই মারামারি হানাহানির খবর আসছে। ব্যাপারটা আঁচ করতে দেরি হলো না তাঁর। এক দৌড়ে নীচে নেমে দরজা খুলে পথে নেমে পড়লেন তিনি। জনতার ভিড় ঠেলে একেবারে সামনে গিয়ে বজ্রনির্ঘোষে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘‌সরে যাও সবাই। আমি থাকতে এঁদের কিছু হতে দেবো না। যদি এদের আঘাত করতে হয়, তাহলে সবার আগে আমাকে মারতে হবে।’

উত্তেজিত জনতা থমকে গেল। যেন জোঁকের মুখে এক চিমটে নুন নয়, গোটা নুনের বস্তাই ঢেলে দেওয়া হয়েছে। তারা চোখ কচলেও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না তাঁদের সামনে পাঁচ ফিট পাঁচ ইঞ্চির যে সুদর্শন পুরুষটি দাঁড়িয়ে আছেন, যিনি স্রেফ মানবিকতার খাতিরে অপরিচিত তিনজনকে রক্ষা করতে নেমে এসেছেন, তিনি আর কেউ নন, ভারত ও বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যানদের একজন— সুনীল মনোহর গাভাসকর!‌ পিছন পিছন নেমে এসেছেন ভারতের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফিল্ডারের তকমা পাওয়া একনাথ সোলকারও।

উন্মত্ত জনতার তেজ যেন মিইয়ে গেল। দেশের গর্ব, মুম্বইয়ের অহংকার গাভাসকরের গায়ে আঁচড় কাটার সাহস দাঙ্গাবাজদেরও ছিল না। যে হাতে ব্যাট তুলে গোটা ক্রিকেটবিশ্বের বাঘাবাঘা বোলারদের শাসন করেছেন একসময়, সেই হাতের তর্জনিই এবার উঠে নির্দেশ করল দূরের রাস্তার দিকে। সঙ্গে দৃঢ় অথচ দৃপ্ত কণ্ঠে হুকুম, ‘‌নিগহুন যা, ইথুন সাগলে নিগহুন যা।’‌ মরাঠি থেকে বাংলায় অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়ায় ‘‌চলে যাও। চলে যাও এখান থেকে সবাই‌।’

বিস্ময়ের ঘোর কাটতে যেটুকু!‌ জনতার‌ ভিড় ফিসফাস করতে করতে থিতিয়ে পড়ল। গাড়ির মধ্যের মহিলাটি ততক্ষণে ভয়ে, আতঙ্কে, ঘটনার আকস্মিকতায় কেঁদে ফেলেছেন। কৃতজ্ঞতায় দুই হাত জড়ো করে ধন্যবাদ জানাতে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে ততক্ষণে গাড়ির চালককে দ্রুত স্থান পরিত্যাগ করতে বলে দিয়েছেন গাভাসকর। গাড়ি বেরিয়ে গেল বিদ্যুৎবেগে।

বয়স আমার ৪০ ছুঁয়েছে। যে বয়সে খেলা দেখা বা ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, তখন আমার কাছে ‘‌ঈশ্বর–পৃথিবী–ভালবাসা’‌ বলতে আর আর খর্বকায় গাঁট্টাগোট্টা মরাঠি— শচীন রমেশ তেন্ডুলকর। গাভাসকরের মহিমা বাবা–কাকাদের মুখে যে শুনিনি তা নয়। তবে শচীনের পাশে আর কাউকে বসাতে ঠিক মন চায়নি। তাঁরা বলতেন, শচীন ভালো, কিন্তু গাভাসকর নাকি বেস্ট। তুলনা চলে আসত, আক্রম–অ্যামব্রোস–শোয়েব আখতারদের সামলানো বেশি কঠিন ছিল নাকি অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নাল, জেফ থমসন, ম্যালকম মার্শালরা বেশি ঘাতক ছিলেন?‌ সে তর্কের নিষ্পত্তি হয়নি কোনওদিন। আমাকে যুক্তি দেওয়া হতো, তখন এক ওভারে বোলাররা যত খুশি বাউন্সার করতে পারতেন, এখনকার মতো ওভারে একটা বাউন্সারের সীমারেখা ছিল না। পিচ ঢাকা রাখা হতো না, সারা রাত শিশির খেয়ে খেয়ে আরও স্যাঁতস্যাঁতে সুইংপ্রবণ হয়ে উঠত না। তখন সে সব কানেই নিতাম না।

আজ যখন বিরাট কোহলির সঙ্গে শচীনের তুলনা হয়, যখন চিৎকার করে জেন জি–কে বলতে ইচ্ছা করে ওরে শচীন বিরাটের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে, কিন্তু কিছুতেই তাদের বোঝানো যায় না, তখন মনে পড়ে যায় খেলাপাগল বাবা–কাকাদের সঙ্গে আমার শৈশবের তর্ক।

আসলে আমরা একটা জিনিস একেবারে ভুলে মেরেছি। শচীন গুরু মানতেন গাভাসকরকে, আবার বিরাট গুরু মানেন শচীনকে। খোদ আমাদের আইডলরাই যেখানে একে অপরের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েছেন, সেখানে আমরা কে?‌ কে আমরা এই তুলনামূলক বিচার করার?‌ আদৌ এঁদের মধ্যে তুলনা হয়?‌ করা সম্ভব?‌ কারণ খোদ গাভাসকরই তো বলে দিয়েছেন, ‘‌Comparisons are really no good in sport.‌.‌.‌’‌

১০ জুলাই, ১৯৪৯। মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভের কাছে পুরন্দর হাসপাতালে গাভাসকর পরিবারে জন্ম হলো এক ছোট্ট শিশুর। বাবা মনোহর, মা মিনাল। একদিন যখন বয়স, তখন ভাইপোকে হাসপাতালে এলেন কাকা নানকুমার। লক্ষ্য করলেন, সদ্যোজাতর বাঁ কানের লতিতে একটি ছোট্ট ফুটো আছে। পরের দিন বিকেলে ফের দেখতে গিয়ে চমকে উঠলেন!‌ এ কী!‌ কানের ফুটোটা গেল কোথায়?‌ তবে কি বাচ্চা অদলবদল হয়ে গেছে?‌ সঙ্গে সঙ্গে তোলপাড় পড়ে গেল হাসপাতালে। খোঁজাখুঁজির পরে দেখা গেল, হ্যাঁ আশঙ্কাই সত্যি। এক জেলেনীর কোলে খিলখিল করে হাসছে সেই কানে ফুটোওয়ালা শিশুটি।

সেদিন যদি সত্যিই বাচ্চা অদল–বদল হয়ে যেত?‌ ছোট থেকে বাবা–মার কাছ থেকে ক্রিকেটে উৎসাহ পেয়ে কিংবদন্তি হওয়ার বদলে হয়তো মাছের ব্যবসাই ভবিতব্য হতো গাভাসকরের।

ভাগ্যিস তা হয়নি। যে বয়সে আপনি আমি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে কেরিয়ারের পথ হাতড়ে বেড়াই, সেই ২১ বছর বয়সেই ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেক হলো গাভাসকরের। বিপক্ষ সেই সময়ের এক নম্বর দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুধু এক নম্বর বললে বোধহয় কিছুই বলা হবে না। রোহন কানহাই, গ্যারি সোবার্স, স্যার ক্লাইভ লয়েড খচিত ক্যারিবিয়ান দল তখন বিপক্ষকে শুধু হারাচ্ছে না, পিষেও মারছে। অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস হয়তো খাতায় কলমে আহামরি নয়, তবু মহানায়কের পদসংকেত তো বটেই। সেই শুরু। পরের টেস্টগুলিতে তাঁর স্কোরগুলো কত? ১১৭,১১৬,৬৪,১২৪,২২০। গোটা সিরিজে তার একার রানই সাতশোর বেশি। কোনও অভিষেক সিরিজে এর বেশি রান আজ অবধি কোনও ক্রিকেটার করতে পারেননি।

সেটা ১৯৭১ সাল। একদিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ছে আবার সেই বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ তখন অগ্নিগর্ভ। কারণ, নকশাল আন্দোলন শুরু হবো হবো করছে। গোটা দেশের নজর ভারতের এই পূর্ব প্রান্তেই। তারই মধ্যে আলোচনার স্পটলাইট গিয়ে পড়ল মুম্বইয়ের দিকে। কে এই গাভাসকর?‌ কী অসম্ভব কাণ্ডটাই না এই বেঁটেখাটো ছেলেটা ঘটাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে!‌

ক্রিকেটের ইতিহাসের সেরা পেস আক্রমণ কী?‌ যে কেউ বলবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই কালান্তক পেস চতুর্ভুজের নাম— ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নার, অ্যান্ডি রবার্টস এবং মাইকেল হোল্ডিং। এঁরা শুধু ফাস্ট বোলিংই করতেন না, নাগাড়ে বাউন্সার এবং পাঁজর লক্ষ্য করে বোলিং করে এমন ত্রাস তৈরি করতেন, যার পরিণাম হতো হয় ব্যাটসম্যানের রক্তপাত না হলে প্রাণ বাঁচিয়ে প্যাভিলিয়নে প্রত্যাবর্তন। হেলমেট তো তখন ছিল না। বহুপরে গাভাসকর স্কালক্যাপ পরতে শুরু করেন, ওই পেস ব্যাটারির গতির সামনে যা কিছুই নয়। সেই মার্শাল, রবার্টস, গার্নাল, হোল্ডিংরা কী চোখে দেখতেন গাভাসকরকে?‌

সেই উত্তর খুঁজতে ঢুকে পড়া যাক রবি শাস্ত্রীর বাড়িতে বহু বছর আগের এক পার্টির সন্ধ্যায়। পার্টিতে নৈশভোজ চলছে। চলছে খানাপিনাও। নানা বর্তমান–প্রাক্তন ক্রিকেটারের সঙ্গে হাজির মার্শাল, রবার্টস, গার্নাল, হোল্ডিংরাও। কে আসছেন, কে যাচ্ছেন, তা নিয়ে ওঁদের বিশেষ হেলদোল নেই। তাঁরা সর্বকালের সেরা। ক্রিকেট নীলরক্ত ওঁদের ধমনীতে। তাঁরা কাউকে বিশেষ পাত্তাটাত্তা দিচ্ছেন না। কেউ এগিয়ে এসে কথা বললে, একবার দায়রক্ষার হাসি হেসে পরক্ষণে চোখও ঘুরিয়ে নিচ্ছেন।

এমন সময় দ্রুত পায়ে প্রবেশ করলেন গাভাসকর। পরনে ধবধবে সাদা পাজামা–পাঞ্জাবি। ঢুকেই রবি শাস্ত্রীকে বলতে শুরু করলেন কীভাবে জ্যামের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ তাঁর গাড়ি আটকে ছিল। যে মার্শাল, রবার্টস, গার্নাল, হোল্ডিংরা এতক্ষণ চেয়ালে গা এলিয়ে বসে নিজেদের মধ্যে গল্প করছিলেন, পাত্তাও দিচ্ছিলেন না কাউকে, তাঁরাই গাভাসকরকে দেখে সামনের টেবিলে পানীয়ের গ্লাস ঠকাস করে রেখে দিয়ে লাফিয়ে উঠলেন। যেন ক্লাসে হেডস্যার ঢুকেছেন, এমন ভঙ্গিমায় সামনে গিয়ে সৌজন্যসূচক ‘‌নড’‌ করে সম্বোধন করলেন, ‘‌দ্য মাস্টার, দ্য মাস্টার।’‌

এই ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চার ফাস্টবোলারের চোখে সুনীল মনোহর গাভাসকরের ভাবমূর্তি— দ্য মাস্টার। আসলে উইলো কাঠের ব্যাট নয়। শিরস্ত্রাণহীন গাভাসকর বাইশ গজে নামতেন যেন তুরস্কের ইস্পাতের সেই তলোয়ারটি নিয়ে, যা শুধু শত্রুর অহংকে যে শুধু ফালাফালাই করে তা নয়, সূর্যের আলো সেই তলোয়ারে পড়ে বিপক্ষের চোখও ধাঁধিয়ে দেয়। সাধে কি আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজের পর তাঁর অসামান্য বীরত্বে দেখে গান বেঁধেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত ক্যালিপসো গায়ক লর্ড রিলেটর। কী বলছে সেই গান?‌

‘‌দ্য রিয়েল মাস্টার জাস্ট লাইক আ ওয়াল

ইউ নো, দ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ কুড নট আউট গাভাসকর অ্যাট অল’‌

এই সম্মান এমনি এমনি আসে না। ১৯৮৩ সাল ম্যাচ চলছে জর্জটাউনে। আলোর গতিতে ম্যালকম মার্শালের বাউন্সার এসে আছড়ে পড়ল গাভাসকরের খুলিতে। ভারতীয় ড্রেসিং রুম থেকে দ্বাদশ ব্যক্তি কিরণ মোরে দৌড়তে দৌড়তে মাঠের মধ্যে এসে গাভাসকরের হাতে ধরানোর চেষ্টা করলেন। বিনিময়ে ধন্যবাদের বদলে শুনলেন ‘‌গেট আউট। কে বরফ আনতে বলেছে তোমাকে?‌ বরফ লাগাব না। হতভম্ব মোরে বরফের বাক্স হাতে নিয়েই মাঠ ছাড়লেন। আর দিনের শেষে গাভাসকর মাঠ ছাড়লেন ১৪৭ রান করে। ড্রেসিংরুমে ফিরে মোরেকে বলেছিলেন, ‘‌ওই সময় আমি বরফ লাগালে মার্শালের মনস্তাত্তিক সুবিধা পেয়ে যেত। ভাবত, আমাকে বোধহয় খুব কাবু করা গেছে। ওকে আমি এই সুবিধা দেবো কেন?‌ বরং দেখাব, তোমার বাউন্সার মাথায় লাগলেও আমাকে টলানো যায় না।’‌

মাঠে চিৎকার করে বুক চাপড়ানো নয়, আসল আগ্রাসন একেই বলে। আবার একই শরীর পালকের মতো নরম বিনয়। টেস্টে ডন ব্র্যাডম্যানের সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙার পরে যখন তাঁকে নিয়ে গোটা বিশ্বে হইচই চলছে, তখন খ্যাতির চূড়ায় বসেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিনীত কণ্ঠে তিনি বলছেন, ‘‌ত্রিশটা সেঞ্চুরি করে রেকর্ড আমি ভাঙিনি। রেকর্ডটা আমি ভাঙতে পারতাম যদি এই ত্রিশটা সেঞ্চুরি আমি পঞ্চাশটা টেস্টে করতে পারতাম। কারণ, ব্র‍্যাডম্যান ২৯টা সেঞ্চুরি করেছিলেন মাত্র ৫২ টেস্টে। তাই এই রেকর্ড আজও ডনেরই।’‌

মাঠের মধ্যে সুনীল যেন অর্জুন। বল তাঁর পাখির চোখ আর হাতের ব্যাট তাঁর গাণ্ডীব। তা বাদে কিছুই দেখবেন না তিনি। তাই ১৯৭৪ সালে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ব্যাট করতে করতে যখন বারবার ঝাঁকড়া চুল যখন তাঁর চোখের ওপরে এসে পড়ছে,আম্পায়ার ডিকি বার্ডের দিকে সটান এগিয়ে গেলেন তিনি। বললেন, চুলটা কেটে দিন তো। মাঠেই হলো হেয়ারকাট। আবার বিশ্বসেরা বোলাদের সামলে আসা সুনীলই ১৯৮২ সালে একটি রঞ্জি ট্রফি ম্যাচে ব্যাট করেছিলেন বাঁ হাতে!‌ অপরাজিতও ছিলেন!‌

থরের কাছে যা হাতুড়ি, ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকার কাছে যা তাঁর ঢাল, আয়রনম্যানের কাছে যা তাঁর জার্ভিস— গাভাসকরের কাছে ব্যাটও তাই। বাধ্য, অনুগত অস্ত্র। তা দিয়ে তিনি যা করেছেন, তা সুপারহিরোর কীর্তির মতোই অনন্য, সদাস্মরণীয়।

নিন্দুকের মুখে শ্লথ ইনিংস, রক্ষ্মণাত্মক ব্যাটিং, মন্থর স্ট্রাইক রেট— যা যা অভিযোগ শুনবেন, যখনই শুনবেন, স্রেফ কতগুলো নাম একবারের জন্য হলেও উচ্চারণ করে দেবেন— ম্যালকম মার্শাল, অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার, ডেনিস লিলি, জেফ থমসন, রডনি হগ, বব উইলিস, ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রম, আব্দুল কাদির, ইয়ান বোথাম, রিচার্ড হ্যাডলি,

নামগুলো নিয়ে বলবেন, ‘‌এই লোকটা এই বোলারদের বিরুদ্ধে ৫১ গড় নিয়ে ১২৫টা টেস্ট ম্যাচে ১০,১২২ রান করেছে। তাও হেলমেট ছাড়া।’‌

দেখবেন, তর্ক ওখানেই শেষ।

শুভ জন্মদিন সিনিয়র লিটল মাস্টার।


Share this post

Leave a Reply